Header Ads Widget

Responsive Advertisement

মেসওয়াকের ফজিলত ও উপকারিতা

   মেসওয়াকের ফজিলত ও উপকারিতা

মেসওয়াক হলো মুসলমানদের দাঁত মাজার উপকরণ যা একটি গাছের ডাল, কাঠ বা শিকড়' হতে পারে। এটি মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুন্নাহ পদ্ধতি। السواك (মিসওয়াক) শব্দটি ساك (সিওয়াক) শব্দমূল থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হল ঘষা, মাজা বা মর্দন করা। এর সবচেয়ে কাছাকাছি বাংলা প্রতিশব্দ হল দাঁতন। ইসলামি পরিভাষায়, দাঁত থেকে হলুদ বর্ণ বা জাতীয় ময়লা দূর করার জন্য কাঠ বা গাছের ডাল ব্যবহার করাকে মিসওয়াক বলে। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হওয়ায় এটি বাংলা ভাষার' একটি শব্দ। এটি 'মেসওয়াক' নামে আত্তীকৃত হয়েছে।

একে অনেক ঐতিহাসিকেরা ব্রাশের প্রাথমিক রূপ মনে করেন। কারণ তখনকার যুগে এটিই ছিল দাঁত মাজার একমাত্র মাধ্যম। ইসলামে মেসওয়াক একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে।অযু ও গোসলের পূর্বে

মেসওয়াক করা সুন্নত। এছাড়া যেকোন ভালো কাজের পূর্বে নবীজি মেসওয়াক করতেন

মিসওয়াক করার পার্থিব ও পরকালীন অনেক ফায়দা ও উপকারিতা রয়েছে। আল্লামা ইবন আবেদিন বলেছেন, মিসওয়াকে রয়েছে ৭০টির ঊর্ধ্বে উপকারিতা। তিনি বলেন, ‘মিসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।’ (ফাতাওয়ে শামি : ১/২৩৯)।

মিসওয়াক কখন করবেন?

মিসওয়াক করার সময় ৯টি। যথা—১. নামাজের সময়, ২. কোরআন মাজিদ তিলাওয়াতের সময়, ৩. অজু করার সময়, ৪. ঘুম থেকে জাগ্রত হলে, ৫. মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হলে, ৬. ঘুমানোর পূর্বে, ৭. দীর্ঘ সময় কথা বলার পর, ৮. পানাহারের পর, ৯. দুর্গন্ধযুুক্ত খাদ্য খাওয়ার পর।


হাদিস বিজ্ঞানের আলোকে মেসওয়াকের কয়েকটি উপকারিতা

পার্থিব উপকারিতা : ১. মেসওয়াক করলে মস্তিষ্ক সজীব হয়। ২. দাঁত জীবাণুমুক্ত হয়। ৩. দাঁতের ক্যালসিয়াম পূরণ হয়। ৪. দারিদ্র্য দূর হয় এবং পরিবারে সচ্ছলতা আসে। ৫. পাকস্থলী রোগমুক্ত হয়। ৬. শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। ৭. মনে প্রফুল্লতা আসে। ৮. স্মৃতিশক্তি বাড়ে। ৯. হৃদয় পরিচ্ছন্ন হয়। ১০. চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। ১১. দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। ১২. মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়

পরকালীন উপকারিতা : ১. ফেরেশতারা মেসওয়াককারীর সঙ্গে মুসাফাহা করেন। ২. আরশ বহনকারী ফেরেশতারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ৩. বিজলির গতিতে পুলসিরাত পার হবে মেসওয়াককারী। ৪. আমলনামা ডান হাতে পাবে। ৫. ইবাদতে আনন্দ পাবে। ৬. মৃত্যুর সময় কালেমা নসিব হবে। ৭. জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে। ৮. জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ৯. গুনাহমুক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। ১০. আল্লাহতায়ালা সন্তুষ্ট হবেন। ১১. ইবাদতে ৭০ গুণ সওয়াব পাবে।

মেসওয়াকের সম্পর্কে দলিল

সুনানে আবু দাউদে যায়েদ বিন খালেদ আলজুহানী রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

لولا أن أشُقَّ على أُمَّتي لأمَرتُهُم بالسّواكِ عندَ كُلِّ صلاةٍ.

আমার উম্মতের জন্য কষ্টের আশঙ্কা না হলে তাদের উপর মিসওয়াককে প্রতি নামাযের জন্য ফরয করে দিতাম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আদেশ সাহাবায়ে কেরাম কীভাবে পালন করেছেন লক্ষ করুন।

সালেহ ইবনে কায়সান রাহ. বলেন-

إنَّ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ، وَأَصْحَابَ رَسُولِ اللهِ صَلَّّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوا يَرُوحُونَ وَالسِّوَاكُ عَلَى آذَانِهِمْ.

উবাদা ইবনে সামেত রা. এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য সাহাবীগণ চলাফেরা করতেন। তারা কানের উপর মিসওয়াক গুঁজে রাখতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাবর্ণনা ১৮০৫

তাঁরা এজন্য কানের সাথে মিসওয়াক গুঁজে রাখতেন যেওযু নামাযের ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায়ই যেন মিসওয়াকের আমল  ছুটে না যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ